একজন মায়ের তার সন্তানেরা শ্রেষ্ঠ অর্জন । মা তার সন্তানদের মানুষ করেন সারাজীবনের সমস্ত প্রাপ্তি আর শ্রম দিয়ে। কিন্তু জীবনের নির্মম পরিহাসে অনেক সময় এই ‘মানুষ’ হওয়া সন্তানের আচরণও অমানবিক হয়ে উঠে।
গল্পটি এমনই এক মায়ের। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের এক দুঃখিনী মায়ের জীবনের নিয়ত সংগ্রামের, টিকে থাকার গল্প এটি।মনোয়ারা বেগম আর আইয়ুব আলীর টানাপোড়েনের সংসারে ‘অভাব নিয়মিত’ মেহমান হলেও ৬ সন্তান নিয়ে ঠিকঠাক চলেই যাচ্ছিল এই পরিবারটি। সন্তানদের সাধ্যমত মানুষ করার চেষ্টা করেন কৃষক আইয়ুব আলী।
আইয়ুব আলী-মনোয়ারা দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে তিন ছেলে- ফারুক হোসেন, নেছার এবং জসীম উদ্দিন পুলিশে কর্মরত। মেয়ে মরিয়ম সুলতানা আছেন শিক্ষকতা পেশায়, ব্যবসা করে বাকি দুই সন্তান শাহাবউদ্দিন আর গিয়াস উদ্দিন ইজি বাইক চালিয়ে ভালোই আছেন।
এতগুলো সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করেও এই মাকে ভিক্ষা করে আজ জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে ।তিন ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা, মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা অথচ সেই মাকেই কিনা জীবন বাঁচাতে ঘুরতে হচ্ছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। দিনে এক বেলাও ঠিকমতো ভাগ্যে জুটছে না ভাত।
বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগমের বয়স হয়েছে, স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পর্যন্ত পারেন না। তারওপর গত ৪-৫ মাস আগে কোমরের হাড় ভেঙ্গে যায়ভিক্ষা করতে গিয়ে পড়ে। সেই থেকে বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে বাবুগঞ্জের স্টিল ব্রিজের পাশে একটি খুপরি ঘরে বেঁচে আছেন।
নিঃস্ব, অসহায়, মূক। মনোয়ারা বেগমের ইজি বাইক চালক ছেলে গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘মাকে আমার সাধ্য মত চিকিৎসা দেবার চেষ্টার করছি। এখন আমিও সহায় সম্বলহীন তাই বৃদ্ধ মা আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী। আমার তিন ভাই পুলিশ অফিসার। তারা তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকে। মায়ের কোন খোঁজ খবর নেয় না।’