সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট ও ফ্রান্সে নবাজী স. কে অবমাননা ও ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ইসলাম অবমাননার কারণে বাংলাদেশের আলেম ও মুসলমানদের কড়া প্রতিবাদী ভূমিকাকে কটাক্ষ করে চরম ইসলামবিদ্ধেষী ও বিতর্কিত এবং বাংলাদেশ থেকে অপমানজনকভাবে বিতাড়িত লেখিকা তসলিমা নাসরিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন।
ক্ষোভ ঝেড়ে লেখা তার লেখাটি এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো –
হাসিনা যত ক্ষতি করেছেন বাংলাদেশের, তত ক্ষতি অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী করেননি। হাসিনা জমায়েতের ডাক দিলে আজ যত লোক হবে , তার চেয়ে বেশি হবে কোনও পীর বা হুজুর ডাক দিলে। এই ব্যবস্থাটি হাসিনাই করেছেন। ওই লিঙ্গপালগুলোর দয়ায় আর কিছু গোলাম-সাংবাদিকদের করুণায় তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। আছেনও। রাজনৈতিক সব বিরোধীদলকে পঙ্গু করে দিয়ে শক্তিশালী করেছেন ধর্মান্ধ জিহাদিদের। এই ক্ষতি পুরণ ২০০ বছরেও সম্ভব নয়।
চরমোনাইয়ের পীরের ডাকে ২/৩ লাখ লোক নেমেছিল রাস্তায়। হেফাজতি ইসলামের ডাকে ৫/৬ লাখ। এরা জিহাদিদের সমর্থনে মাঠে নেমেছিল, যে জিহাদিরা নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে ইউরোপের শহরগুলোয় নির্মমভাবে হত্যা করছে। হাসিনা পাশ্চাত্যের দয়া দাক্ষিণ্য নিয়মিত পাচ্ছেন, তারপরও পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধদের জিহাদি জমায়েতকে তিনি ঠেকানোর চেষ্টা করেননি। কোথায় পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে , মেরে ধরে ছত্রভঙ্গ করবে মিছিল, তা নয়, ওদের রাজনৈতিক মোনাজাতে পুলিশও অংশগ্রহণ করেছে। ধর্ম শেষপর্যন্ত চোর গুণ্ডা ধর্ষক খুনী আর আইন শৃংখলা বাহিনীর মধ্যে কোনও ফারাক রাখে না।
হাসিনা ক্ষমতায় এলে দেশের হিন্দুরা নিরাপদে থাকবে –এমন আশার বাণী কত যে শুনেছি জীবনে! গতকাল বাংলাদেশের কুমিল্লায় ১০টা হিন্দু বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে জিহাদিরা। যে ক’জন হিন্দু আছে দেশে, ওরাও এরপর আর ওই দেশে থাকতে চাইবে না।
জিহাদিদের আম্মির কাছ থেকে কোনও সুস্থ সুন্দর শান্তির সমাজ আশা করাটাই তো বোকামো। উনি ভেবেছেন অর্থনীতি ভালো করলেই বুঝি তাঁর সাত খুন মাফ। আরব দেশের কত ধনী দেশকে জিহাদিরা খেয়ে ছিবড়ে করে দিয়েছে। এত যে বলছি কী লাভ! যে কানে দিয়েছে তুলো পিঠে বেঁধেছে কুলো — সে মরে যাবে কিন্তু শোধরাবে না।